অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ল্যাগ মুক্ত স্পিড আপ করার টিপস

অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ল্যাগ মুক্ত স্পিড আপ করার টিপস
Posted by Sayeem
Your Ads Here

অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ল্যাগ মুক্ত স্পিড আপ করার ৭টি টিপস

 

বর্তমানে চারপাশে যেদিকেই তাকাবেন প্রায় সবার হাতেই ‘অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের’ স্মার্টফোন দেখতে পারবেন। এরকম নয় যে অনান্য অপারেটিং সিস্টেমের স্মার্টফোন মানুষ ব্যবহার করেনা তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আধিক্য বেশি। এর মূল কারন হচ্ছে এই অপারেটিং সিস্টেমের চমৎকার সব স্মার্টফোন যেমন কিনতে অনেক টাকা লাগে ঠিক তেমনি এর লো-এন্ড ফোনগুলোর দামও আবার থেকে যায় হাতের নাগালের মধ্যেই।

তবে, অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের একটি কমন সমস্যা হচ্ছে এটি সময়ের সাথে সাথে কিছুটা ধীর গতির হয়ে যায়। তাই, আজকে আমি কিছু টিপস শেয়ার করব যার সাহায্যে সম্পুর্ন না হলেও আপনার স্মার্টফোনটিকে অনেকাংশেই স্মুথ করে তোলা সম্ভব হবে।

 

১। আপনার স্মার্ট ফোনটির ফার্মওয়্যার আপডেট করুনঃ আপডেটেড ফার্মওয়্যার অনেক ক্ষেত্রেই কিছু ল্যাগের সমস্যা দূর করে থাকে। ‘আপডেট’ এর অর্থই হচ্ছে আগের তুলনায় নতুন কিছু সুবিধা যোগ করা। আর, ফার্মওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে স্মার্টফোন ছাড়াও প্রতিটি ডিভাইসেরই কম-বেশি ক্যাপাবিলিটি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। অনেক সময় হয়ত সেই পরিবর্তন আপনার চোখে পরবে না তবে এমন অনেক ত্রুটি মুক্ত করার জন্য স্মার্টফোনের ফার্মওয়্যার আপডেট করা জরুরী।

 

২। আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি ‘রিসেট’ করুনঃ আমরা সবাই জানি যে ‘রিসেট’ করার অর্থ হচ্ছে ‘পুনঃস্থাপন করা’ বা ‘নতুন করে করা’, আর স্মার্টফোনের ক্ষেত্রেও ‘রিসেট’ অপশনটি ঠিক এর অর্থের মতই কাজ করে। আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে যে আপনি যখন আপনার স্মার্টফোনটি কিনে এনেছিলেন তখন আপনার স্মার্টফোনটির অপারেটিং ছিল ভীষন স্মুথ? কিন্তু, সময়ের সাথে আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনটির মধ্যে নানা রকম ফাইল জমা পরার কারনে সেই স্মার্টফোনটি হয়ে গিয়েছে ল্যাগি।

এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার স্মার্ট ফোনটি ‘ফ্যাক্টোরি রিসেট’ করেন তবে স্মার্ট ফোনটি থেকে সব ফাইল মুছে গিয়ে ঠিক সেই প্রথম কিনে আনার দিনের মত স্মুথ হয়ে যাবে। সব ফাইল বলতে আমি আপনার ব্যবহারের জন্য যে ফাইল গুলো জমা হয়েছিল সেগুলোই বুঝাচ্ছি। কিন্তু এতে করে যেহেতু সিস্টেম ফাইল মুছে যাচ্ছেনা তাই আপনি রিসেট করার পর পাবেন একদম স্মুথ একটি স্মার্টফোন।

সতর্কতাঃ ‘ফ্যাক্টোরি রিসেটের’ ফলে আপনার স্মার্ট ফোনের ইন্টারন্নাল স্টোরেজে থাকা প্রয়োজনীয় কন্টাক্ট, ক্ষুদে বার্দা, ক্যালেন্ডার এনট্রি, মেমো এবং আপনি যে অ্যাপলিকেশন গুলো ব্যবহার করতেন - এগুলো সব মুছে যাবে। তাই, রিসেট করার পূর্বে অবশ্যই প্রয়োজনীয় সব তথ্য গুলো ব্যাক-আপ নিয়ে রাখুন। যদিও, গুগলের অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের ফলে কন্টাক্ট এবং ক্যালেন্ডার এন্ট্রি সহ কিছু ক্ষেত্রে ক্ষুদে বার্তাও সিনক্রোনাইজড হয়ে থাকে।

৩। মাঝে মাঝেই আপনার ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ চেক করুনঃ স্মার্ট ফোনের মেমরীর পরিমান কমে গেলে স্মার্ট ফোনে আপনি ল্যাগ অনুভব করতে পারেন। এজন্য, আপনি মাঝে মাঝে আপনার ইন্টারনাল ফাইলে জমে থাকা গেমস, অ্যাপলিকেশন, মিডিয়া ফাইল যেমন, গান, ভিডিও ইত্যাদি এক্সটার্নাল স্টোরেজ তথা মেমরী কার্ডে চালান (ট্রান্সফার) করে দিন। তবে, বেশির ভাগ লো-এন্ড স্মার্টফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজের পরিমাণ কম হয়ে থাকে বিধায় এই টিপসটি সেই সব স্মার্ট ফোনে কাজ নাও করতে পারে।

 

৪। প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারেনঃ আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে টাস্ক কিলারের মত কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপলিকেশন ইন্সটল করে ব্যবহার করতে পারেন।

 

 পুরোনো স্মার্ট ফোন গুলোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন ‘auto task killer’ অ্যাপলিকেশনটি। এটি আপনার নির্ধারিত ‘n’ সময় অন্তর অন্তর আপনার নির্ধারিত কিছু অ্যাপলিকেশনের প্রোসেস কিল করে স্মার্ট ফোনের র‍্যাম ফ্রি করতে সাহায্য করবে এবং স্বাভাবিক ভাবেই, বেশি র‍্যাম ফ্রি থাকার অর্থ হচ্ছে স্মার্ট ফোন দ্রুত অপারেট হবে।

 ভালো মানের একটি এন্টিভাইরাস অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করতে পারেন। কম্পিউটারের মত স্মার্টফোনও নানা রকম ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং একটি ভালো এন্টিভাইরাস এই সকল ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যারকে সনাক্ত করন এবং পরে মুছে ফেলে আপনার স্মার্টফোনটিকে কিছুটা হলেও গতিশীল করবে।

 ব্যবহার করতে পারেন ‘start up manager’ এর মত কিছু অ্যাপলিকেশন। এই অ্যাপলিকেশনের ফলে আপনি আপনার ফোন বুট বা রিস্টার্ট হবার সময় নির্ধারন করে দিতে পারবেন যে ঠিক কোন অ্যাপলিকেশন গুলো সক্রিয় হবে আর কোন গুল নিষ্ক্রিয় থাকবে।

 ‘Juice defender’ টাইপের অ্যাপলিকেশনগুলো অনান্য অ্যাপলিকেশন গুলোকে ব্যাকগ্রাউন্ডে অটোমেটিক স্টার্ট হতে না দিয়ে আপনার ফোনের এবং আপনার ফোনের ব্যাটারীকে সাপোর্ট দিয়ে যাবে।

 ‘cache cleaner’ অ্যাপলিকেশনগুলো মোবাইলের মেমরীতে জমে থাকা বিভিন্ন রকম কেচ ফাইল মুছে দিয়ে স্মার্টফোনকে স্মুথ করবে।

 ‘Apps to SD card’ অ্যাপলিকেশনটি একটি প্রয়োজনীয় অ্যাপলিকেশন। এর সাহায্যে আপনি আপনার স্মার্ট ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজে ইন্সটলড থাকা অ্যাপলিকেশনগুলো আপনার ফোনের এক্সটার্নাল মেমরী কার্ডে ট্রান্সফার করতে পারবেন এবং এতে করে ইন্টার্নাল স্টোরেজ ফ্রী হবে, বিধায় কিছুটা হলেও স্মার্ট ফোন দ্রুত কাজ করবে। তবে মনে রাখবেন, এই অ্যাপলিকেশনটির সাহায্যে সকল প্রকার অ্যাপলিকেশনই মেমরী কার্ডে ট্রান্সফার করা সম্ভব হবেনা, কিছু কিছু অ্যাপলিকেশন ট্র্যান্সফার করার জন্য আপনার ফোনটিকে ‘রুট’ করে নিতে হবে।

 ’Spare parts’ জাতীয় অ্যাপলিকেশনগুলো কিছুটা অ্যাডভান্স লেভেলের কনফিগারেশন প্যানেলে আপনাকে এক্সেস করতে দিবে, যেমন ধরুন- ট্র্যানজিশান অ্যানিমেশন কনট্রোল।

৫। অপ্রয়োজনীয় অ্যাপলিকেশন গুলো মুছে ফেলুনঃ আমরা বিভিন্ন সময়ে প্লে স্টোরে ঘুরতে ঘুরতে দেখা যায় অনেক রকম অ্যাপলিকেশন ইন্সটল করি কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই অ্যাপলিকেশন গুলো খুব একটা ব্যবহার করিনা। এরকম অপ্রয়োজনীয় অ্যাপলিকেশন মুছে ফেলা উচিৎ। এতে করে স্মার্টফোনের র‍্যাম ফ্রি থাকবে এবং ফলাফল স্বরূপ আপনার স্মার্ট ফোনটি আগের তুলনায় কিছুটা হলেও ল্যাগ ফ্রি হবে।

৬। স্মার্ট ফোনটি রিস্টার্ট করুনঃ আমরা কম্পিউটারে কোন সমস্যায় পরলে কম্পিউটার রিস্টার্ট দিয়ে থাকি, তাতে করে কম্পিউটারের সমস্যা কিছু ক্ষেত্রে দূর হয়ে যায়। স্মার্ট ফোনের ব্যপারটি একই। যদিও, এই ট্রিকসটি একটি টেম্পোরারী অপশন, তবুও এটা কাজ করে।

৭। আপনার স্মার্ট ফোনটি রুট করুনঃ স্মার্ট ফোন ‘রুট’ করার ফলে আপনি কিছু অ্যাডিশনাল সুবিধা পাবেন এবং সেই সুবিধা গুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার স্মার্ট ফোনটি আরও ভালো ভাবে কাজে লাগাতে পারবেন। যদিও এক্ষেত্রে রুটিং প্রোসেসটি এক প্রকারের রিস্কি সমাধানের পর্যায় পরে তবে এখন ইন্টারনেটে বিভিন্ন সাইট এবং ফোরামের কল্যাণে স্মার্ট ফোন ‘রুট’ করা এখন বলা চলে অনেক সহজ এবং ঝুঁকির পরিমানও ঠিক আগের মত নেই।

 

ঝুঁকির কথা বললাম কেননা, আপনি যদি রুট করার সময় সফল না হন তবে আপনার স্মার্ট ফোনটি ব্রিক অবস্থায় চলে যেতে পারে। আবার, আপনি সফল ভাবে রুটিং প্রোসেস সম্পন্ন করলেও আপনার স্মার্ট ফোনের সাথে দেয়া ‘ওয়ারেন্টির’ অফারটা শেষ হয়ে যাবে যদিও এখন আপনি চাইলেই আপনার রুটেড অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটি আন-রুট করতে পারবেন এবং ওয়ারেন্টি ফিরে পাবেন। এখন বলি যে, একটি অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালিত স্মার্ট ফোন স্পিড আপ এর সাথে এই রুটিং এর কী সম্পর্ক।

 

 ওভার ক্লকঃ আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটি রুট করার পর ডিভাইসের প্রসেসরটি ওভারক্লক করতে পারবেন এবং একটি ওভার ক্লকড প্রসেসর স্বাভাবিক ভাবেই স্বাভাবিক অবস্থায় থাকা প্রসেসরের তুলনায় বেশি পরিমান কাজ করতে সক্ষম হবে। তাই, প্রসেসর ওভার ক্লক করার মাধ্যমে আপনি এভাবেই আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনটির গতি বৃদ্ধি করতে পারবেন।

 কাস্টম রমের ব্যবহারঃ আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটি রুট করার পর ডিভাইসটিতে কাস্টম রম ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। যদিও, কাস্টম রম ব্যবহার কিছুটা অ্যাডভান্স লেভেলের পর্যায়ে পরে এবং ঝুঁকি পূর্ন তবুও কাস্টম রম ব্যবহার করে স্মার্ট ফোনের গতি বৃদ্ধি করা যায় খুব সহজেই।

কেননা, কাস্টম রমে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপলিকেশন থাকে না বললেই চলে এবং এর ফলে কোন অ্যাপলিকেশন অহেতুক স্মার্ট ফোনের র‍্যামের রিসোর্স ব্যবহার করেনা এবং এছাড়াও কাস্টম রম ব্যবহারের ফলে স্মার্ট ফোনের কিছু বাগ ফিক্স হয়ে যায়। তবে ঝুঁকির কথা বললাম এজন্যেই যে মাঝে মাঝে কাস্টম রম গুলো স্ট্যাবল হয় না এবং এর ফলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।

 অপ্রোয়োজনীয় সিস্টেম অ্যাপ মুছে ফেলতে পারবেনঃ প্রতিটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট ফোনের স্টক রমে দেখা যায় নানা রকম অ্যাপলিকেশন প্রি-ইন্সটলড করা থাকে যা অনেকেই ব্যবহার করেন না। ‘রুট’ করার ফলে আপনি যেহেতু আপনার ডিভাইসের অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ক্ষমতা হাতে পাচ্ছেন সে কারনে আপনি চাইলে সিস্টেমে ইন্সটল্ড থাকা অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো মুছে ফেলতে পারবেন ফলে আপনার স্মার্ট ফোনটি কিছুটা হলেও হবে স্মুথ এবং দ্রুত গতির।

 

Your Ads Here

Your Ads Here

Your Ads Here

Your Ads Here

নবীনতর পোস্টসমূহ নবীনতর পোস্টসমূহ পুরাতন পোস্টসমূহ পুরাতন পোস্টসমূহ

Related Posts

Your Ads Here

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Loading comments...