প্রযুক্তি ডট কম এখন ব্লগার বাংলাদেশ (নাম ও ডোমেইন পরিবর্তন)
Posted by
আসাদ
Your Ads Here
আজকের পোষ্টের টাইটেল দেখে বুঝতেই পারছেন যে, আমরা আজকে আামাদের ব্লগের পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা করব। তবে এটাকে শুধুমাত্র আমাদের ব্লগের পরিবর্তনের গল্প মনেকরে এড়িয়ে যাবেন না। কারন আমাদের ব্লগের পরিবর্তনের গল্পের পাশাপাশি একটি ব্লগের নাম, ঠিকানা ও ডোমেইন পরিবর্তনের ফলে কি কি কাজ করতে হয় এবং কিভাবে পুনরায় পরিবর্তীত ব্লগকে সার্চ ইঞ্জিনের সাথে পরিচয় করিয়ে ট্রাফিক ফিরেয়ে আনতে হয় সে বিষয়ে আলোচনা করব। সেই জন্য আমি আবারো বলছি এই বিষয় আমাদের একান্ত ব্যক্তিগত ভেবে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমাদের প্রয়োজনে যেভাবে আজ আমরা ব্লগের নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করেছি ঠিক সেভাবে অন্য কোন একদিন আপনার প্রয়োজনের তাগিদে আপনার ব্লগের ঠিকানা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হতে পারে।
আপনারা সবাই আমাদের ব্লগকে প্রযুক্তি ডট নামে চিনেন। আমরা দীর্ঘ প্রায় চার বৎসর যাবৎ প্রযুক্তি ডট কম নামে আমাদের ব্লগ প্রমোট করে আসছি। গত বছরের শেষের দিকে আমরা ব্লগের নাম-ঠিকানা ও ডিজাইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কিন্তু কাজের ব্যস্ততার কারনে ও সময়ের অভাবে পরিবর্তন করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। কারণ একটি ব্লগির ডোমেইন পরিবর্তন করার ফলে অনেক সমস্যা হয়। সেই সমস্যা সমাধান করার জন্য অনেক সময়ের প্রয়োজন হয় বিধায় সময়ের অভাবে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে এসে এই পরিবর্তন করতে হয়েছে।
আসলে প্রযুক্তি ডট কম ব্লগের নাম ও ঠিকানা পরিবর্তনের মূল কারণ হচ্ছে এর ডোমেইন। আমরা যে ডোমেইন নামটি নিয়েছিলাম সেটির বানান ভূল ছিল। তাছাড়া প্রযুক্তি ডট কম শব্দটি বাংলা হওয়াতে আমাদের ব্লগের অধিকাংশ পাঠক ব্লগের ডোমেইন নেম মনে রাখার ক্ষেত্রে দ্বিধার মধ্যে পড়তেন বা সঠিক বানান মিলাতে না পারাতে পরবর্তীতে পুনরায় আমাদের ব্লগ ভিজিট করতে সমস্যায় পড়তেন। এ বিষয়ে অনেক পাঠক আমাকে ফোনে কল করে ব্লগের ঠিকানা জিজ্ঞেস করতেন ও নামের বানানটি সংশোধনের বিষয়ে সাজেস্ট করতেন। অনেক দিন যাবৎ এই বিষয়টি আমাকে পীড়া দিচ্ছিল কিন্তু দীর্ঘ দিনের পুরনো ব্লগের ঠিকানা পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌছতে পারছিলাম না।
ব্লগের ডোমেন পরিবর্তন ও ডিজাইন পরিবর্তন করতে আমাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। বিশেষকরে গত চার বৎসরে আমার ব্লগের যতগুলো ব্যাক লিংক গঠন হয়েছিল তার সবগুলোই হারিয়ে গেছে। ব্লগের নাম, ঠিকানা ও ডিজাইন পরিবর্তন করতে আমার যে সমস্যা/ক্ষতি এবং যা যা করতে হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ টপিক আকারে তুলে ধরছি।
০১। ডোমেইন পরিবর্তণঃ
প্রথমেই ডোমেইন নেম পরিবর্তনের জন্য আমাকে প্রায় ১০০০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। কারণ আমার ব্লগের পূর্বের ডোমেইন এর বাৎসরিক চার্জ পরিশোধের মাত্র চার মাস হয়েছিল। নতুন ডোমেন কেনার পর পূরাতন ডোমেইনটি ব্লগার ড্যাশবোর্ড হতে রিমুভ করে দিতে হয়েছে। সেই সাথে নতুন ডোমেইন সেট করার ক্ষেত্রে যাতে কোন প্রকার সমস্যা না হয় সে জন্য পুরাতন Blogspot সাব ডোমেইনটিও পরিবর্তন করতে হয়েছে। সাব ডোমেইন পরিবর্তনের কারণ হচ্ছে যে, পুরাতন সাব ডোমেইন এর DNS টি পূর্বের ডোমেইনে সেট করা রয়েছে বিধায় নতুন ডোমেইন এর DNS রেকর্ড করতে সমস্যায় পড়তে হত বিধায় পুরাতন সাব ডোমেইনটিও পরিবর্তন করতে হয়েছে। পুরাতন সাব পরিবর্তন করতঃ নতুন সাব ডোমেইন নেওয়ায় নতুন ডোমেইন এর DNS রেকর্ড করতে কোন সমস্যা হয়নি।০২। ব্লগের Internal Link পরিবর্তনঃ
ব্লগের ডোমেন পরিবর্তনের ফলে ব্লগের সকল পোস্টের লিংক অটোম্যাটিক্যালি পরিবর্তন হয়ে যায় কিন্তু পোস্টের ভীতরে যে Internal Link ছিল সেটা পরিবর্তন হয়নি। আপনারা নিশ্চয় জানেন যে, ব্লগের Internal Link ব্লগে এ্যাডমিনকে নিজেই সেট করতে হয় এবং নিজেই পরিবর্তন করতে হয়। যার ফলে আমার ব্লগের প্রায় ২৫০ টি পোস্টের Internal Link লিংক পরিবর্তন করতে আমাকে অনেক সময় ব্যয় ও পরিশ্রম করতে হয়েছে।০৩। ব্লগের থিমস পরিবর্তনঃ
পার্থিব নিয়মে মানুষের অভ্যাস ও রুচি পরিবর্তনশীল বিধায় সেই ধারাবাহিকতায় আমরা পূর্বের ব্যবহৃত ব্লগার থীমটি পরিবর্তন করে নতুন থীমস আপলোড করি। আমাদের ব্যবহৃত বর্তমান থিমটি আমাদের নিজের ডেভেলপ করা নয়। আপনাদের অনেকের হয়ত এই থিমটির সাথে পরিচয় রয়েছে। এই থিমটির নাম Magone, অতি পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি ব্লগার থিমস। এটি প্রোপার এসইও সহ AMP অপটিমাইজ করা। অনলাইনে সার্চ করলেই এই থিমের ফ্রি ভার্সন পেয়ে যাবেন। তবে আমরা ফ্রি ভার্সন ব্যবহার করছি না। অনলাইন থেকে ২৩ ডলার খরচ করে থিমটি কিনে নিয়েছি। আমাদের বর্তমান থিমটি পরিপূর্ণ একটিভ করা। একটিভ করার কারনে আমরা এই থিমস এর সকল ফিচার্স ব্যবহার করতে পারছি। তবে ব্লগের নাম ঠিকানা পরিবর্তনের সাথে থিমস এর কোন সম্পর্ক নেই।০৪। ব্লগার থিমস সম্পর্কে স্টাডিঃ
Magone অত্যান্ত ভালমানের ও উন্নতমানের একটি ব্লগার থিমস। একটি ব্লগ ব্যবহারের পূর্ণাঙ্গ ফিচার্স এর ভীতরে সেট করা রয়েছে। এটিকে যে কোন স্টাইলে ব্যবহার করা যায়। আপনি চাইলে এটি ম্যাগাজিন কিংবা পার্সনাল উভয় ধরনের ব্লগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এই ব্লগের ফিচার্সগুলো অত্যান্ত জটিল হওয়ার কারনে এটি সেটআপ সম্পর্কে ধারনা নিতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। এই থিমটি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারনা নেওয়ার জন্য আমাকে প্রায় দুই দিন ব্যয় করতে হয়েছে। আপনি যদি ব্লগ ডেডেলপমেন্ট সম্পর্কে মোটামোটি ধারনা সম্পন্ন না হন তাহলে এটি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারনা নিতে অনেক সময় ব্যয় হতে পারে। ব্লগটি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারনা না পাওয়া পর্যন্ত এটি আপনার ব্লগে সঠিকভাবে সেট করতে পারবেন না।০৫। পোষ্টের পুরাতন ডিজাইন সংরক্ষণঃ
ব্লগ পোষ্টের ভীতরে অনেক ধরনের ফিচার্স থাকে যেগুলো পরিবর্তন করা অনেক কঠিন কাজ। কারণ পোস্টের ভীতরে যে আইডি ও ক্লাশ দেওয়া থাকে সেগুলি খোঁজা ও পরিবর্তন করা অনেক জঠিল ও সময় সাপেক্ষ কাজ। সেই জন্য ব্লগে নতুন থিমস সেট করার পর ব্লগের পোস্টের ভীতরের স্টাইলের জন্য ব্যবহৃত CSS কোডগুলি নতুন থিমস এর ভীতরে সেট করে দিতে হয়। এই কাজটি না করলে পোস্টের ভীতরে ব্যবহৃত অনেক ফিচার্স কাজ করবে না।০৬। এসইও এর ক্ষেত্রে প্রভাবঃ
যেহেতু আপনার পুরাতন ব্লগের সকল পোস্ট এর লিংক পরিবর্তন হয়ে যাবে সেহেতু সার্চ ইঞ্জিন আগের লিংকের মাধ্যমে নতুন ব্লগে পৌছতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে Google Search Console হতে আপনার পুরাতন ব্লগটি ডিলিট করে দিতে হবে এবং নতুন ব্লগটি Google Search Console এর সাবমিট করতে হবে। সেই সাথে অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে ব্লগ সাবমিট করা থাকলে সেখানেও ব্লগ সাবমিট করতে হবে।০৭। পুরাতন পোস্ট সার্চ ইঞ্জিন হতে রিমুভ করাঃ
পুরাতন ব্লগটি Google Search Console হতে ডিলিট করার সাথে সাথে নতুন ব্লগ Google Search Console এর সাবমিট করবে না। কারণ Google Search Console হতে পুরাতন ব্লগটি রিমুভ করার সাথে সাথে গুগল সার্চ ইঞ্জিন হতে সকল পোস্ট মুছে যায় না। Google Search Console হতে পুরাতন ব্লগ রিমুভ করার পর প্রায় একমাস পর্যন্ত সার্চ ইঞ্জিন পোস্টগুলো শো করতে থাকে। এ ক্ষেত্রে আপনি নতুন ব্লগটি দ্রুত Google Search Console সাবমিট করে দিলে নিজে নিজেই কপিরাইটের দায়ে ফেশে যেতে পারেন। সে জন্য গুগল সার্চ ইঞ্জিনে ব্লগ সাবমিট করার পূর্বে এক মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে আপনি চাইলে Google Url Removal Tool এর মাধ্যমে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনার ব্লগের সকল পুরাতন পোস্ট গুগল সার্চ ইঞ্জিন হতে রিমুভ করে নুতন ব্লগটি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট করতে পারেন। এ কাজটি করার জন্য আপনার পুরাতন ব্লগের সকল পোস্টগুলো Google Url Removal Tool এর সাবমিট করতে হবে। সাবমিট করার ফলে গুগল বট সকল পোস্টগুলো যাচাই করবে। এ ক্ষেত্রে আপনারা পুরাতন লিংকগুলো থ্রো করে লিংকের কাঙ্খিত পোস্টে পৌছতে না পারলে গুগল বট ২৪ ঘন্টার মধ্যে পোস্টগুলো সার্চ ইঞ্জিন হতে মুছে দেবে। এ কাজটি করার জন্যও আপনাকে অনেক সময় ব্যয় সহ পরিশ্রম করতে হবে।সবকিছু সফলভাবে সম্পন্ন করার পর গুগল যখন আপনার পুরাতন ব্লগের সকল পোস্ট সার্চ ইঞ্জিন হতে মুছে দেবে তখন আপনার নতুন ব্লগটি Google Search Console এর সাবমিট করবেন। তাহলে গুগল আবার আপনার ব্লগটি গুগল বট এর মাধ্যমে ক্রল করে তাদের তথ্য ভান্ডারে ইনডেক্স করতঃ এলগরিদম অনুসারে সাজিয়ে সার্চ রেজাল্ট পেজে শো করবে।
উপসংহারঃ আমাদের ব্লগের পরিবর্তন সম্পর্কে অনেক্ষন বক বক করলাম। আমি আশা করছি আমাদের ব্লগের পরিবর্তনের গল্প থেকে আপনি অন্তত কিছুটা হলে শিখতে পেরেছেন। এই পোস্ট মনযোগসহকারে পড়লে আপনি একটি ব্লগের ঠিকানা পরিবর্তন করে সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট করে পুনরায় আপনার ব্লগের হারানো ট্রাফিক ফিরে পেতে সক্ষম হবেন। আমাদের পোস্টের কোন বিষয়ে আপনার দ্বিমত বা অভিযোগ থাকলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত সাধরে গ্রহন করে মূল্যানের চেষ্টা করব।
Your Ads Here
Your Ads Here
Your Ads Here
Your Ads Here
নবীনতর পোস্টসমূহ
নবীনতর পোস্টসমূহ
পুরাতন পোস্টসমূহ
পুরাতন পোস্টসমূহ
মন্তব্যসমূহ