যে কারনগুলো না জানলে আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক হতে পারে
ইন্টারনেট ব্যবহার করেন আর ফেসবুক চিনেন না এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। বর্তমানে ফেসবুক আমাদের জীবনেরই একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া এখন আর সেই সোশ্যাল মিডিয়া নেই বনে গেছে লাইফ মিডিয়া।
আমরা মানুষেরা প্রায় সব বিষয়েই অনেক বেশী ট্রেন্ডি। সেলফি থেকে শুরু করে আমাদের সাথে যখন যা ঘটে তার প্রায় সব ধরনেরই আপডেট সাথে সাথে ফেসবুকে যেয়ে দিয়ে আসি।
যার দরুন বর্তমানে কোন নিউজ দেখার জন্য আর নিউজ পেপার লাগে না। আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন করলেই চলবে।
আর কথা না বাড়িয়ে এখন শুনবো কাজের কথা। ফেসবুক আপনার কাছে এতো এতো প্রয়োজনীয় একটি স্থান, তো সেটার সুরক্ষা করবেন কিভাবে? আপনি কি জানেন ছোট্ট একটি ভুলের কারনে আপনার অ্যাকাউন্টটি অন্য কারোর হাতে চলে যেতে পারে।
আর একবার আপনার আইডি হ্যাক বা অন্য কারোর হাতে চলে গেলে সেটি হবে আপনার জন্য অনেক অনেক বেশী বিপদের আর সেটার পরিমান আমার থেকে আপনি নিজেই বেশি ভালো জানেন।
ফেসবুকে এমন অনেক কাজ আছে যেগুলো আপনি আর সব কাজের মতোই স্বাভাবিক মনে করেন। কিন্তু না, এগুলোই হতে পারে আপনার আইডি হ্যাক হবার কারন।
চলুন জানি বিস্তারিত-
১। কে আপনার প্রোফাইল নিয়মিত ভিজিট করে?
এটি এতোটাই মহামারি আকার ধারন করেছে যে, বর্তমানে ফেসবুক কর্তিপক্ষ জানিয়েই দিয়েছে যে এমন কোন অ্যাপ, টুলস বা অপশন নেই যেটি ব্যবহার করে জানা যাবে যে ফেসবুকে কে কে আপনার প্রোফাইল ভিজিট করেছে।
আর তাই আমিও স্ট্রংলি আপনাদের রেকমেন্ড করবো, খবরদার ভুলেও কারোর প্রোফাইল ভিজিট রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করার দরকার নেই।
২। সেলিব্রেটি অ্যাড রিকোয়েস্ট-
কোন নাম করা বা ফেসবুক সেলিব্রেটি পাবলিক আপনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে, আপনি তো অবাক সাথে সাথে অ্যাড করে নিয়েছেন। এবার সে আপনাকে ম্যাসেজ করলো একটি লিংক দিয়ে আর আপনি দৌড়ের উপ্রে চলে গেলেন সেখানে।
আপনার কি মনে হয়, কোন সেলিব্রেটির এতো সময় আছে? আর আপনি এমন কি হয়ে পড়েছেন যে সে তার মূল্যবান সময় আপনার পেছনে ব্যয় করবে?
ভুলে যান আর ধরে নিন এটা নিশ্চিত ফাদ আপনাকে ধরার জন্য। ভালো হয় এগুলো থেকে বিরত থাকুন।
৩। কাস্টমাইজ অপশন-
অনেক সময় দেখবেন আপনার কাছে কাস্টমাইজ রিকোয়েস্ট আসবে। যেমন, ফেসবুক টাইম লাইনের রঙ, ডিজাইন পরিবর্তন, কোন স্পেশাল ইফেক্ট ইত্যাদি।
মনে রাখবেন ফেসবুক কর্তিপক্ষ এমন কোন অপশন ব্যবহার কারিদের জন্য এখন পর্যন্ত রাখেনি। এগুলো সব থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশনের কাজ। হতে পারে কোন ফিশং টুলস।
ভালো হয় এগুলো বর্জন করুন।
৪। সার্ভে বা জরীপ-
সুন্দর বা আকর্ষণীয় কোন ইমেজ বা ব্যনার দিয়ে আপনাকে বললো একটি ছোট্ট সার্ভে বা জরীপে অংশ গ্রহন করতে। বিনিময়ে পাবেন পুরষ্কার জেতার সুযোগ।
হুম এটা নিশ্চিত ফেক, তবে হ্যাঁ কিছু কিছু কোম্পানি সত্যি এমনটি করবে তবে এইভাবে চটকদার বিজ্ঞাপন দিবে না।
সুতরাং বর্জন করুন বা বুঝে শুনে স্টেপ নিন।
৫। ভিডিও মার্কেটিং-
“ফাঁস হয়ে গেলো অমক সেলিব্রেটির নুড ভিডিও” দেখার সাথে সাথেই ক্লিক? এটা আপনাকে ধরার অনেক সহজ একটি পথ। ভালো চান তো বর্জন করুন।
উপদেশ-
আরও অনেক উপায় আছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনাকে ট্র্যাক বা হ্যাক করার চেষ্টা হতে পারে। যেমন, ম্যাসেজে লিংক দিয়ে, বা আপনি যদি কোন মেয়ে হয়ে থাকেন তবে হুট করে আপনাকে কেউ একটি লিংক দিয়ে বললো যে এই লিংকে যেয়ে দেখো তোমার কতোগুলো ছবি দেখতে পাবে।
হুম এমনি বললে হয়তো স্বাভাবিক ভাবেই আপনি যাবেন, কিন্তু এটা ফিশিং। ভালো হয় নির্ভরযোগ্য মানুষ থেকে পাওয়া লিংক গুলোই ক্লিক করুন।
বর্তমানে অ্যান্টিভাইরাস গুলো বেশ শক্তিশালী এবং ছোটখাটো ফিসিং বেশ সহজেই ধরে ফেলে। আর ব্রাইজার গুলোও এখন আগের থেকে অনেক শক্তিশালি হয়েছে। যেমন, বর্তমানে গুগল ক্রোম আপনাকে এমন কোন লিংক ভিজিট করতে দিবে না বা সতর্ক করবে যেখানে ভাইরাস বা এমন কিছু থাকার সম্ভাবনা আছে।
মনে রাখবেন আপনার ছোট্ট একটি ভুলের কারনে ওয়েব অনেক বড় ধরনের স্ক্যান্ডেল ছরাতে পারে। তাই নিজে নিরাপদ থাকুন এবং অন্যকে সতর্ক করুন।
আচ্ছা আপনি কি কখনো এমন কোন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন? কখনো কি আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে বা হওয়ার উপক্রম?
যদি হয়ে থাকে তবে আবার কিভবে সেটি ফেরত পেয়েছেন?
আপনার অভিজ্ঞতা, মতামত বা নির্দেশিকা শেয়ার করতে পারেন আমাদের কমেন্ট বক্সে। হতে পারে উপরে বর্ণিত আলোচনা থেকে আপনার উপদেশটি বেশী গুরুত্বপূর্ণ
মন্তব্যসমূহ